তারাবির নামায কত রাকায়াত জেনে নিন।
তারাবির নামাজ হচ্ছে সুন্নত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসে এশার নামাজের পর ৮ রাকাত তারাবির নামাজ পড়তেন। (বুখারী, মুসলিম)
রমজান মাস কিংবা অন্যান্য মাছের সব সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিজরসহ ১১ রাকাত তারাবির নামাজ পড়তেন। (বুখারী মুসলিম) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসে ২৩, ২৫, ২৭ তারিখে জামাতের সাথে মহিলাদের সহ তারাবির নামাজ পড়তেন। আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসায়ী।
উমার রাদিয়াল্লাহু তা'আলা জামাত করে বিতরসহ ১১ রাকাত তারাবির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। (মুয়াত্তা মালেক) অজুর বশত: কেউ জামা আতে যোগদান করতে না পারলে একাকী পড়বে, কখনো পরিত্যাগ করা উচিত হবে না। যেহেতু এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। তারাবিরসহ নামাজ স্ত্রীলোকেরাও পড়বে এবং তারা পুরুষের জামাতের শামিল হতেও পারবে। (আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসাঈ )
- রমজান ছাড়া অন্য মাসে যাকে তাহাজ্জুদ বলা হয় রমজান মাসে তাকে তারাবি বলে। (ফাতহুল কাদীর,, ফয়জুল বারা, বাহারুল রায়েক )
- তারাবির নামাজ সম্বন্ধ।
- তারাবি অর্থ স্বস্তি লাভ বা বিশ্রাম গ্রহণ করা। লোগাতে, মুগরব, কামরুল মুহিত, মাছ মাউল বিহার।
- অতএব কিরায়াত, রুকু ও সিজদা দীর্ঘ করে চার রাকাতে পর বসে কিছু সময় বিশ্রাম করবে।
তারাবির নামাজের জন্য কোন নির্দিষ্ট সূরা বা দুয়া কথা হাদিসে পাওয়া যায় না। কেউ কেউ তারাবির নামাজকে ফজরের মতো মনে করে থাকেন এবং কোন অবস্থাতেই উক্ত জামাত পরিত্যাগ করা চলবে না ধরে নেন। এটা অতি রঞ্জন, কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সারা রমজান মাত্র তিন দিন জামাতের সাথে আট রাকাত তারাবি পড়িয়েছিলেন এবং ফরজ হওয়ার ভয়ে অবশিষ্ট দিনগুলোতে উক্ত নামাজ যার যার বাড়িতে নিজ নিজ গৃহে পড়তে বলেছিলেন। ( বুখারী, ৪/৬৪ পৃষ্ঠা, মুসলিম, 1/266 পৃষ্ঠা )
এতে প্রমাণিত হয় যে, বর্তমানে তা ফরজ নয় এবং পূর্বেও ফরজ ছিল না। অতএব, ওমর অসুবিধা বসত: বিশেষ অবস্থায় তা তরফ করা যেতে পারে। তবে রমজানে প্রত্যেক নেক কাজের পূর্ণ যখন সত্তর গুণ পাবার আশা আছে তখন এই মোবারক মাসে উক্ত নামাজ ছাড়া উচিত হবে না। হাদিসে এসেছে যে ব্যক্তির মাসে রজনীগুলোতে ঈমানের সাথে নেকির আশায় তারাবি নামাজ পড়বে তার পূর্বে পাপরাশি ক্ষমা করা হবে।( সিহাসিত্তা )
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়েছেন তারাবির জামাত যে ব্যক্তি তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ইমামের ইকতিদা করতে থাকবে সে সমস্ত রাত্রি জেগে নামাজ পড়ার সওয়াব করবে ।( মুসনাদে আহমদ ৫/১১ পৃষ্ঠা, আবু দাউদ ১/৫২১ পৃষ্ঠা, তিরমিজি ২/৭১ পৃষ্ঠা )
কোন কোন লোক তারাবির নামাজ মোটেও পড়ে না, এমনকি তারা জামাত করে তারাবির নামাজ পড়াকে বিদআত বলে থাকে এটা অত্যন্ত অন্যায়। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং অন্তত: তিন দিন জামাতের সাথে তারাবি পড়েছেন এবং জামাতের সাথে তা করতে উৎসাহিত করেছেন। অধিকানতু ফরজ হওয়ার ভয়ে বাড়িতে পড়তে বলেছেন।
কিন্তু করতে নিষেধ করেননি। উম্মাতের প্রতি সুনাত হওয়ার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনে যেকোনো কাজ মাত্র একবার করার প্রমানই যথেষ্ট। সাহাবায়ে কিরামদের সকলেই তারাবির নামাজ জামায়াতের সাথে পড়তেন। কাজেই তারাবির জামাত কায়েম করা নিঃসন্দেহে সুন্নাত। ( আবু দাউদ, সুনানে কুব্রা )
কাজেই এই প্রমান্য সুন্নত কোনক্রমে পরিত্যাগ করা উচিত হবে না। মেয়েদের পক্ষে তারাবির জামাত কায়েম করা জায়েজ। স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্বর্ণযুগের সাহাবীদের বিবিদের জন্য তারাবির নারী জামাত কায়েম করার মনো সম্মতি দান করেছেন। ( মুসনাদে আহমদ, কিয়ামূল লাইল )
উম্মুল মুমিনিন আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু এবং উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু মেয়েদের ফরজ নামাজের এবং তারাবির জামাতের ইমামতি করতেন।( দ্বারা কুতুনি, বাইহাককি, তাল খিসুল হাবিব )
আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url