ঈমান সম্পর্কে সাহাবীদের ঘটনা | আমল সম্পর্কে আলোচনা।
আসসালামু আলাইকুম সম্মানিত পাঠক বৃন্দ আপনারা আমার থাম্বেল দেখে বুঝতে পেরেছেন যে আমি আজকে এ পোষ্টের মাধ্যমে ঈমান ও আমল সম্পর্কে কিছু কথা তুলে ধরব যা সরাসরি বুখারী শরীফ মিশকাত শরীফ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।হযরত মায়াজ রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দশটা জিনিসের উপদেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, যদি তোমাকে হত্যা করা হয় এবং পোড়ানো হয় তবুও তুমি আল্লাহপাকের সাথে কোন কিছু শিরক করবে না। যদি তোমাকে তোমার পরিবার ও সম্প্রতি ছেড়ে বের হয়ে যেতে বলা হয় তবুও কখনো তোমার পিতা-মাতার অবাধ্যতা করবে না। কখনো ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ ত্যাগ করবে না। কেননা যে ব্যক্তি এক ওয়াক্ত ফরজ নামাজ ইচ্ছাকৃতভাবে ত্যাগ করে তার জন্য আল্লাহর কোন জিম্মাদারী থাকে না।
আরো পড়ুন,
কখনো সরাব পান করবে না কেননা সারাফ সকল অশ্লীল কাজের মূল গুনাহ থেকে সাবধান! কেননা, গুনাহার কারণে আল্লাহর ক্রোধ নাজিল হয়। মানুষ তোমাকে হালাক করলেও জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করবে না। যদি তুমি কোন লোকজনের সাথে থাকো এবং তাদের মধ্যে মহামারি দেখা দেয় তাহলে দঢ়পদে থাকবে। তোমার সামর্থ্য অনুযায়ী পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করবে, তাদেরকে আদব শিখানোর ব্যাপারে কোনরূপ শিথিলতা করবে না এবং আল্লাহ সম্পর্কে তাদেরকে ভয় প্রদর্শন করবে। (মুসনাদে আহমাদ ও মা আরিফুল হাদিস)
ঈমান সম্পর্কে আলোচনা।
হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে বলেন, এমন কেউ আছে কি? সে এ বিষয়গুলো আমল করবে অথবা কমপক্ষে অন্য আমলকারীকে বলে দিবে? আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমি উপস্থিত আছি। অতঃপর তিনি আমার হাত ধরে এই পাঁচটি বিষয় বর্ণনা করলেন:
যে হারাম বিষয়টি থেকে দূরে থাকে, সে শ্রেষ্ঠ ইবাদত কারী বান্দাদের মধ্যে করলে হবে। আল্লাহ তাআলা তোমার তকদিরে যা লিখেছেন, তাতে সন্তুষ্ট থাকো। এতে করে তুমি আল্লাহ পাকের প্রিয় বান্দা দের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
তোমার প্রতিবেশীদের সাথে সদ্য ব্যবহার কর। এটা তুমিও মমিন হয়ে যাবে। নিজের জন্য যা কামনা কর, অপরের জন্য তাই পছন্দ করো। এভাবে তুমি পূর্ণ মুসলমান হয়ে যাবে। কখনো অট্টহাসিতে ফেটে পরোনা। কেননা, অট্টো হাসি অন্তরকে মৃত্যু করে দেয়। (মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি, তোরজু মানুষ সুন্নাহ)
ঈমানের দিক কয়টি ও কি কি?
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আব্দুল কায়েস গোত্রের ১ প্রতিনিধি দল যখন রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে পৌঁছালো। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, এরা কোন কওমের লোক? অথবা কোন গোত্রের প্রতিনিধি দল? (এ সন্দেহ রাবির)। তারা জবাব দিলেন, আমরা রাবিয়া গোত্রের লোক।
হযরত রাসুল করেন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের গোত্রকে মোবারকবাদ অথবা ( রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন,) তোমাদের প্রতিনিধি দলকে অপমান বিহীন ও অনুতাপবিহীন মোবারকবাদ। অতঃপর প্রতিনিধি দল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, হে আল্লাহ রাসুল! মাহে হারাম ব্যতীত অন্য মাসে আমরা আপনার নিকট আসতে পারি না।
কেননা, আমাদের ও আপনার মধ্যবর্তী স্থলে এ কাফের মুয়াজ গোত্রের অন্তরায় স্বরূপ রয়েছে। সুতরাং আমাদেরকে এমন একটি পরিষ্কার নির্দেশ দান করুন যা আমরা আমাদের ওপর লোকদের গিয়ে বলতে পারি এবং যা দ্বারা আমরা সোজা জান্নাতে চলে যেতে পারি। তারা পানীয় ( অর্থাৎ, পান-পাত্র) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল। হানবী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম তাদেরকে কয়েকটি ব্যাপারে আদেশ করলেন এবং চারটি বিষয় নিষেধ করলেন।
প্রথম তাদের এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনতে আদেশ করলেন এবং বললেন, তোমার জান কি এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা কি? তারা উত্তর করল আল্লাহ তার রাসূলের অধিকতর জ্ঞাত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন:
আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নেই এবং মোহাম্মদ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল-এ ঘোষণা করা, নামাজ কায়েম করা, যাকাত আদায় করা এবং রমজান মাসে রোজা রাখা। এছাড়া গনিমতের (জিহাদ দলবদ্ধ মালের) খুমোস এক- পঞ্চমাংশ (ইমামের নিকট জমা ) দেয়া।
অতঃপর হুজুর রাসূলুল্লাহ ওয়াসাল্লাম তাদেরকে চারটি সরাব পাত্রের ব্যবহার নিষেধ করলেন! হানতুম, দুব্বা, নকির, ও মোজাফফাত। আরো বলেন এ সকল কথা স্মরণ রাখবে এবং তোমাদের ওপর লোকদেরকে বলবে। (বুখারী ও মুসলিম শরীফ)
ঈমানের পরীক্ষা সম্পর্কে হাদিস।
হযরত উবাদা ইবনে সামেত রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আমি কিছু সংখ্যা লোকের সাথে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বায়াত করলাম। তিনি এরশাদ করলেন (হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম) আমি এই মর্মে তোমাদের ভাইয়াত গ্রহণ করেছি যে, তোমরা আল্লাহর সাথে শরীর কাউকে করবে না, চুরি করবে না, সন্তানদের হত্যা করবে না।
তোমাদের মধ্যে যারা এসব সঠিক পালন করবে আল্লাহ পাকের কাছে তার পুরস্কার নির্ধারিত রয়েছে। আর যারা এগুলো লংঘন করে গুনাহের লিপ্ত হবে, তাদের যদি দুনিয়াতে এ ব্যাপারে শাস্তির প্রদান করা হয় তাহলে তা তার গুনাহর কাফফারা হয়ে যাবে এবং সে পাক পবিত্র হয়ে যাবে।
তবে আল্লাহপাক যদি কারো গুনাহের কাজ গোপন রেখে থাকেন তাহলে তা হবে আল্লাহ পাকের এক্তিয়ারভুক্ত। তিনি ইচ্ছা করলে তাকে শাস্তি দেবেন। কিংবা ইচ্ছা করলে মাফ করে দেবেন। (সহি বুখারি, হাদিস নম্বর ৬৯৫০)
সাহাবায়ে কেরামের আমলের প্রতিযোগিতা।
হযরত আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, তোমরা বেহেস্তে যেতে পারবে না যতক্ষণ না তোমরা ঈমানদার হবে। আর তোমরা পুরোপুরি ঈমানদার হতে পারো না, যতক্ষণ না তোমাদের পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক স্থাপিত হবে। (মুসলিম)
আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url