উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড ধানের জাত | হাইব্রিড ধানের চাষ পদ্ধতি।
বড় মৌসুমে হাইব্রিড ধানের চাষ বাংলাদেশের চাষযোগ্য জমি দিন দিন কমছে এবং লোক সংখ্যা বাড়ছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা মেটাতে হাইব্রিড ধান চাষের বিকল্প নেই। উফসি যাতে তুলনায় হাইব্রিড ধান চাষে ৪০ থেকে ৫০% ফলন বৃদ্ধি হয়। তাই হাইব্রিড ধান চাষাবাদ সময়ের দাবি এবং হাইব্রিড ধান উৎপাদন পদ্ধতি কুফচি ধান চাষ পদ্ধতির মতোই। তবে হাইব্রিড ধান চাষের ক্ষেত্রে বীজ তোলার জন্য বিশেষ যত্ন বান হওয়া প্রয়োজন।
হাইব্রিড ধান চাষের উল্লেখযোগ্য দিক হলো হাইব্রিড ধানের জন্য প্রতি হেক্টর মাত্র ২০ কেজি বীজ ব্যবহার করা হয় বীজ তলার জমিতে প্রতি বর্গমিটারে দুই থেকে তিন কেজি গোবর অথবা পচা আবর্জনা স্যার প্রয়োগ করতে হবে। প্রতি শারিতে মাত্র একটি বা দুইটি চারার রুপন করতে হবে। প্রত্যেক মৌসুমের জন্য নতুন হাইব্রিড বীজের প্রয়োজন হয়।
পোষ্ট আলোচ্য সুচিঃ
- হাইব্রিড ধানের জাত নাম
- হাইব্রিড ধানের বীজতলা তৈরি
- ধান চাষে জমি তৈরি করা
- জমিতে সার প্রয়োগের পরিমাণ
হাইব্রিড ধানের জাত নির্বাচন করা।
- এস এল ৮ এইচ
- ব্রি-হাইব্রিড এক দুই তিন
- হীরা
- তেজ
- এসিআই টু
- সাথী
- লাল তীর
- মধুমতি
- আলোরন
- জাগরন, জাগরণ -৩
- রূপসী বাংলা-১
- রুপালি
- সচ্ছল ইত্যাদ
হাইব্রিড ধানের বীজতলা তৈরি।
উুরশী ধানের বীজতলা তৈরির পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। উপরন্ত বীজতলায় জৈব সার প্রয়োগ করা বাধ্যতামূলক। বিশ তলার প্রতি বর্গমিটারে দুই থেকে তিন কেজি পচা গোবর বা পচা আবর্জনা সার প্রয়োগ করতে হবে। তাছাড়া যারা সুস্থ সবল রাখতে জমি তৈরীর সময় প্রতি বর্গমিটারে চা৪ গ্রাম ডিএসপি,৭ গ্রাম এমওপি, এবং বীজ বোনার ১০ দিন পরে ৭ গ্রাম ইউরিয়া ও১০ গ্রাম জিপসাম স্যার প্রয়োগ করা প্রয়োজন। ১ মিটার চওড়া ও জমি অনুযায়ী সুবিধা মত লম্বা করে বীজতলা তৈরি করতে হবে।
আরো পড়ুন
- আলু চাষের উপযুক্ত সময় | আলুর রোগ ও প্রতিকার।
- ইন্ডিয়ান ভিসা কিভাবে করতে হয় | ইন্ডিয়ান ভিসা করতে কি কি লাগে।
- জমি ক্রয়ের পূর্বে ও পরে করণীয় | জমি কেনার আগে কি দেখতে হয়।
- দ্রুত সরকারি চাকরি পাওয়ার উপায় | দ্রুত চাকরি পাওয়ার মন্ত্র।
- কবরের প্রথম রাত কেমন হবে | কবরের আজাব সম্পর্কে ঘটনা।
দুটি বীজ তলার মাঝে ২৫-৩০ সেন্টিমিটার নালা রাখতে হবে। ৩০ সেন্টিমিটার নালা ফাঁকা রাখার জায়গা থেকে ১৫ সেন্টিমিটার গভীর করে মাটি তুলে দুই ধারে বীজ দোলায় দিতে হবে। এতে দুই বীজ তলার মাঝের নালা দিয়ে সেজদা পানি নিষ্কাশন ছাড়াও বিভিন্ন প্রকার পরিচর্যা করা সহজ হবে। ১৫ নভেম্বর হতে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে হাইব্রিড ধানের বীজ গোপন করতে হবে।
ধান চাষে জমি তৈরি করা।
উর্বর জমি, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ও সেচের সুবিধা রয়েছে এমন জমি নির্বাচন করতে হবে। চারা রোপণের জন্য উত্তমরূপে চাষ ও মই দিয়ে মাটি কাঁদা ময় করে নিতে হবে। শেষ চাস ও ময় দেওয়ার সময় লক্ষ রাখতে হবে যেন জমিটা যথেষ্ট সমতল হয় এবং অনুমোদিত হারেসার ও প্রয়োগ করতে হবে।
চারা রোপন পানি রাখাঃ জমিতে চারা রোপণের সময় জমিতে পানি রাখতে হবে এবং গোছা পতি এক বা দুটি করে সুস্থ সবল চারা রোপন করতে হবে। ৩০-৩৫ দিনে চারা ১৫ জানুয়ারির মধ্যে রোপন করতে হবে। শারিতে চারা রোপণ করতে হবে। শারি থেকে শারি দূরত্ব ২০ সেন্টিমিটার অর্থাৎ ৮ ইঞ্চি এবং চারা থেকে চারা দ্রুত হবে 15 সেন্টিমিটার অর্থাৎ ৬ ইঞ্চি। রোবনে তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে মরে যাওয়া চারা তুলে পুনরায় নতুন যারা রোপন করতে হবে।
জমিতে সার প্রয়োগের পরিমাণ।
স্যার ব্যবস্থাপনা হাইব্রিড ধান থেকে প্রত্যাশিত ফলন পেতে জমিতে ডিএপি ও জিপসাম এবং জিংক সালফেট দুই থেকে তিন অংশ এমপি সাপোর্ট করতে হবে। ছেস চাচি কিছুটা ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে।
হাইব্রিড ধানের চাষাবাদের অনুমোদিত স্যারের মাত্রা ও পদ্ধতি।
যদি কোন কৃষক তার জমিতে টিএসপি স্যারের পরিবর্তিতে ডি এ পি সার ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে হেক্টর প্রতি ২৭০ কেজি এর স্থলে ২১০ কেজি ইউরিয়া স্যার ব্যবহার করবেন এবং তা ৩ কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে। স্যার উপরি প্রয়োগের সময় জমিতে ছিপ ছিপে পানি রাখতে হবে। সারসম্যভাবে ছিটানোর পর হাতড়িয়ে বা নিড়ানি দিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। সার প্রয়োগ তাহলে জমিতে অতিরিক্ত পানি থাকলে তা বের করে দিতে হবে এবং সার প্রয়োগে দুই থেকে তিনদিন পর জমিতে পর্যাপ্ত পানি রাখতে হবে।
হাইব্রিড ধানের আগাছা দমন ও পানির ব্যবস্থাপনা।
স্যার অগ্রি প্রয়োজন আগেই অবশ্যই জমিতে আগাছা পরিষ্কার করে নিতে হবে এবং সার প্রয়োগের পর তা মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে হাত দিয়ে বাডার দিয়ে অথবা আগাছা নাশক প্রয়োগের আগাছা দমন করা যেতে পারে চারা রোপনের পর থেকে জমিতে পাঁচ থেকে সাত সেন্টিমিটার অর্থাৎ দুই থেকে তিন ইঞ্চি পানি রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। ধান গাছ যখন গোছালো থোর আসা শুরু করে তখন পানির পরিমাণ কিছুটা বাড়ানো উচিত। এই অবস্থায় হারায় পড়লে ধানের চিটার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
ফসল কর্তন করাঃ হাইব্রিড ধানের ছড়ায় শতকরা ৮০ ভাগ ধান পেকে গেলে ধান কাটতে হবে। যত্ন সহকারে আবাদ করলে বিঘা প্রতি ৩০ থেকে ৪০ মণ ধানের ফলন পাওয়া যায়।
নিম্নে কিছু স্যারের নাম উল্লেখ করা হলো।
- ইউরিয়া
- ডিএসপি বা ডিএপি
- এমওপি
- জিপসাম
- দস্তা জিংক সালফেট
- স্যার প্রয়োগের পরিমাণ।
- সার প্রয়োগের নির্দিষ্ট কোন পরিমাণ না উল্লেখ থাকলেও হেক্টর প্রতি কেজি
- ইউরিয়া ২৭০ কেজি
- পিএসপি বা ডিএপি ১৩০ কেজি
- এম ও পি ১২০ কেজি
- জিপ সাম ৭০ কেজি
- দস্তা জিন সালফেট ১০ কেজি
সার প্রয়োগের সময়ঃ ১/২ অংশের চাষের সময়। ১/৪ অংশ চারারোপনের ১৫ থেকে ২০ দিন পর ১/৪ অংশ, ৩৫/৪০ দিন পর এবং অবশিষ্ট ১/৪ গোছা থোর আসার সময়।
শেষ চাষের সময়ঃ ২/৩ অংশ শেষ চাষের সময় এবং১/৩ অংশ দ্বিতীয় উপরের প্রয়োগের সময়।
ফসল সংরক্ষণ সংরক্ষণঃ হাইব্রিড ধানের ফসল সংরক্ষণ অন্যান্য ওসি যাদের মতোই ধান মারায় যারাই করে রোদে শুকিয়ে গুদামজাত করতে হবে।
সতর্কতাঃ হাইব্রিড ধানের বীজ থেকে উৎপাদিত ধান পুনরায় বীজ হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না। কারণ এতে ফলন আগের মত পাওয়া যাবে না। ধন্যবাদ সবাইকে ধৈর্য সহকারে এই পোস্টটি পড়ার জন্য।
আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url