রুই কাতলা মাছ চাষ পদ্ধতি | কোন মাছ চাষে লাভ বেশি।
কাঁচামাল: মাছের পোনা, ঔষধ, খাবার ইত্যাদি।যন্ত্রপাতি/সরঞ্জাম/উপকরণ বাঁশ, খেওয়া জাল, নেট হাড়ি খাবার প্রদানের জন্য গামলা বা বালতি। খাবার জলজ উদ্ভিদ, আগাছা এবং মাঝে মাঝে পানির তলদেশ থেকে পচ া জৈব পদার্থ খেয়ে জীবনধারণ করে। এছাড়াও ফিস মিল, খৈল গোড়া, কুরাই ইত্যাদি পুকুরের চাষের সময় সম্পূরক খাদ্য হিসেবে ব্যবহার ব্যবহার করা হয়।
তবে ছোট অবস্থায় এদের প্রধান খাদ্য থাকে প্রাণী কণা বা পলাংটন। এছাড়াও ও চাউলের গোড়া, গ্রামের ভুসি এবং সরিষার খৈল খাদ্য হিসেবে খাদ্য হিসাবে ব্যবহার হয়ে আসছে।
পোষ্ট সুচিপত্রঃ
- মাছের জীবানুনাশক ঔষধ
- মজুদ পুকুরের আয়তন ও গভীরতা কত
- মাটির উর্বরতা বৃদ্ধির উপায়
- মাছের সম্পূরক খাদ্য তৈরি ও প্রয়োগ পদ্ধতি
- কাতলা মাছের শ্রেণিবিন্যাস
মাছের জীবানুনাশক ঔষধ।
৯.১% শক্তি সম্পন্ন রোটেনন ৭% সম্পূর্ণ রোটেনন তামাকের গুড়া বা বীজের খৈল গোবর অথবা কম পোস্ট এবং হাঁস মুরগির বিষ্ঠা জৈব সার কম পোস্ট চার হাজার কেজি ইউরিয়া ১০০০ কেজি টিএসপি ৫০ কেজি এমওপি।
আরো পড়ুন,
মজুদ পুকুরের আয়তন ও গভীরতা কত।
রুই মাছ চাষের জন্য পুকুর নির্বাচনের নিম্নলিখিত বিষয়ের উপর লক্ষ্য রাখতে হবে।
- পুকুর নিজস্ব মালিকানাধীন হলে ভালো হয় তবে লিজ নেওয়া পুকুর হলে তার নূন্যতম পাঁচ বছরের জন্য হলে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যায়।
- পুকুর বন্যা মুক্ত হতে হবে।
- পুকুরপাড় উঁচু ও মজবুত হতে হবে।
- পুকুরের ছায়া সৃষ্টি করতে পারে কিংবা পাতা পানিতে পড়ে পানির নষ্ট করতে পারে এমন কোন গাছপালা পুকুর পাড়ে থাকা যাবে না।
- পুকুরে যথেষ্ট আলো বাতাসের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
- পুকুরে তলদেশে 4-6 ইঞ্চি বেশি কাদা থাকা যাবে না।
পুকুরের আয়তন নির্বাচন করা।
- ব্যবস্থাপনা সুবিধার জন্য পুকুরের আয়তন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- পুকুরের আয়তন ২০ থেকে ৫০ শতাংশের মধ্যে হলে ব্যবস্থাপনা করতে সুবিধা হয়। তবে পুকুরের আয়তন ১০০ এর বেশি হওয়া যাবে না।
- কুকুরের গড় গভীরতা ৪.৫-৫.৫ ফুট হলে ভালো হয়।
- পুকুরের মাটি ও পানির গুনাগুন নির্বাচন।
- তোআশ এবং বেলে দোয়াশ মাটির পুকুর সবচেয়ে ভালো হয়।
- এটেল মাটির পুকুরের পানি ঘোলা থাকে ফলে সূর্যের আলো কম প্রবেশ করতে পারে এবং প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদন কম হয়।
- বেলে মাটির পুকুরের পানীয় পুষ্টির অপচয় বেশি হয়।
- এছাড়াও মাটি ও পানির নিম্নলিখিত গুনাগুন মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা খুবই জরুরী বলে মনে করা হয়।
মাটির উর্বরতা বৃদ্ধির উপায়।
রুই মাছ চাষের জন্য মাটির প্রয়োজনীয়তা গুনাগুন নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ যেমন মাটির গঠন মাত্রা পি এইচ ৬.৫-৭.৫, জৈব কার্বন ১.৫-২.৫, জৈব পদার্থ ২.৫-৪.৫, নাইট্রোজেন ৫০ থেকে ৭৫ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১০ থেকে ১২ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম তিন থেকে চার মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩০ থেকে ৪০ মিলিগ্রাম উপরে নিম্নলিখিত স্যার প্রয়োগের ক্ষেত্রে মাটির প্রচলিত গুনাগুন অক্ষুন্ন রাখে।
পরিমাপক মাত্রা নির্বাচন করা।
পি পি এইচ পি ৭ থেকে ৯ তাপমাত্রা ২৮ থেকে ৩১ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড অক্সিজেন ৫ থেকে ৭ পিপিএম লবণাক্ততা ০ থেকে ৪ পিপিটি ঘোলাত ০ খরতা ৪০ থেকে ২০০ পিপিএম।
সম্মানিত পাঠ ক উপরে নিম্নলিখিত মাত্রা অনুযায়ী পুকুরের সার প্রয়োগ এবং মাটির প্রয়োজনীয়তা এবং পানির বিশুদ্ধতা নির্বাচন করে রুই মাছ চাষ করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
কাতল মাছ চাষ।
এখন আমরা যে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব কাতল মাছ কিভাবে চাষ করে লাভবান হওয়া যায়। কথা না বাড়িয়ে কাতল মাছের চাষ পদ্ধতি গুলো জেনে নেওয়া যাক।
সম্মানিত পাঠক বৃন্দ বাংলাদেশের বা ভারতের বহুল পরিচিত মাছের মধ্যে কাতল মাছ একটি অন্যতম মাছ। যার বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে catla catla. দেশি রুই জাতীয় মাছের মধ্যে তুলনামূলক বৃহৎ আকৃতির মাথা ও মুখ আর প্রশস্থ দেহ এই মাছকে সহজেই অন্য মাস থেকে আলাদা করে দেই। উজ্জ্বল ধূসর বর্ণের পৃষ্ঠদেশ ক্রমেই উভয়পাসে ও অস্কিওদিকে রূপালী সাদা বর্ণ ধারণ করেছে। ছাই কালো বর্ণের পার্টনার এই মাছের আইসও তুলনামূলক বড় হয়ে থাকে।
পুকুর নির্বাচন করা।
কাতল মাছ চাষের জন্য পুকুর নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। মজুদ পুকুরের বৃদ্ধির জন্য মাছ অনেক দিন ধরে রাখা হয় এক চাষ মিশ্র কম্পোজিট যে প্রথাতেই হোক না কেন ছোট আঙ্গুলে মাছ বা চারা পোনা ১৫ গ্রাম থেকে 35 গ্রাম ছাড়লে ভালো হয়। বিরল ক্ষেত্রে ধানিপুনাও ছাড়া যেতে পারে। প্রয়োজন ভিত্তিক বা পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী এগুলিকে বাড়তে দেওয়া হয়ে থাকে।
একসাথে বা ক্রমান্বয়ে যেভাবেই হোক না কেন পুকুরের অনেক দিন ধরে রাখতে হয় তাই মজুদ পুকুরের জন্য সারা বছর জল থাকতে হবে। প্রয়োজনে পুকুর থেকে জল বের করা বা জল প্রয়োগের ব্যবস্থা থাকলে ভালো হয়। যেহেতু পুকুরের একসাথে নানা প্রকারের মাছ চাষ করা হয় সেই জন্য জলের গভীরতা ১.৫ মিটার থেকে ২ মিটারের অর্থাৎ 4 ফুট থেকে ছয় ফুট মধ্যে হওয়া বাঞ্জনীয়।
পুকুরের পাড় বেশ উঁচু হওয়া দরকার জলের উপরে তল থেকে অন্তত এক মিটার অর্থাৎ তিন ফুট উঁচু হওয়া খুবই প্রয়োজনীয়। যেন কোন মুহূর্তেই অতি বৃষ্টিতে মাছ ভেসে না যেতে পারে।পুকুরের তলদেশের মাটি দু আজ বা এঁটেল দোয়াজ হওয়া দরকার পুরোপুরি বালি বা অতিরিক্ত পাক মাছ চাষের বিঘ্ন ঘটাতে পারে। পুকুর আয়তকার এবং আয়তনে এক বিঘা থেকে 15 বিঘা হতে অর্থাৎ এক হাজার বর্গমিটার থেকে ১০ হাজার বর্গমিটার হলে খুবই ভালো হয়।
পুকুরেচার ধার এবং পরিপার্শ্বিক অবস্থা এমন হওয়া দরকার যেন অবাধ্যে সূর্য কিরণ চলে পড়তে পারে এবং পুকুরে জলের নিকটবর্তী পাড়ে ক্ষয় রোধের জন্য যেন ঘাস থাকে। পারে ছোট ছোট গাছ লাগানো যেতে পারে কিন্তু জলে ছায়া পড়ে এমন গাছ লাগা মোটে উচিত নয়। নারকেল বা তাল গাছ লাগানো যেতে পারে উত্তর-পশ্চিম দিকে এরা খুব ছায়া করে না কিন্তু এদের সিখোর পুকুরপাড় সংরক্ষণে সাহায্য করে।
মাছের সম্পূরক খাদ্য তৈরি ও প্রয়োগ পদ্ধতি।
কাতল মাছ জলাশয়ের উপরের স্তরের মাছ কেননা এদের মুখের ওপরে চোয়াল ছোট হওয়ায় পানির উপরের স্তরের খাদ্য সহজে গ্রহণ করতে পারে। এরা উভয় ভজী প্রাণী তবে প্রাণী প্লানটন এর অপেক্ষায় উদ্ভিদ প্লাংটন এরা বেশি খেয়ে থাকে। এদের খাদ্যের মধ্যে ক্রাইস্টেসিয়া সেওলা প্রোটিফার কীটপতঙ্গ অন্যতম।
এরা সাধারণত রাতে আহার করে না দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খাদ্য গ্রহণ করার প্রবণতা এদের সবচেয়ে বেশি থাকে। এ মাছ খুব দ্রুত বর্ধনশীল পরীক্ষায় দেখা গেছে এরা প্রতি মাসে ৭.৫ থেকে ১০ মিলিমিটার পরিমাণ বাড়াতে পারে। ধান ক্ষেতে এদের বৃদ্ধি অত্যন্ত বেশি কেননা ধান গাছ সংলগ্ন শৈবাল খাদ্য হিসেবে এদের অত্যন্ত সম্মেলনের খাবার।
কাতলা মাছের শ্রেণিবিন্যাস।
এরা রুই মাছের অনুরূপ বদ্ধ জলাশয়ে প্রজনন করে না এবং দুই বছরের মধ্যে যৌন প্রাপ্ত হয় সাধারণত বর্ষাকালে নদীতে ডিম দিয়ে থাকে। ডিম গুলো ভাসমান নয় এবং আঠালো নয়। রং হালকা লাল ব্যাস হয়ে ৪.৫ থেকে ৫.৪ মিলিমিটার হয়ে থাকে। আমাদের দেশে এদের প্রচলিত প্রজন্মের মাধ্যমে প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে ঋণ উপন্যাস উৎপাদন করা হয়ে থাকে।
কাতলা মাছ প্রতি কেজি দেহের ওজনে বিশ হাজার থেকে দুই লক্ষ ৪৬ হাজার টি ডিম উৎপাদন করে থাকে যা বর্তমানে এদের কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে বদ্ধ জলাশয়ের প্রজনন করানো হয়। চারা পড়া ছাড়া আগের মজুদ পুকুর পরিচর্যা জল উদ্ভিদ বা আগাছা মুক্ত করতে হবে। পুকুরে মাছের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ক্ষতি করে গ্রাস কাপের খাদ্য নয় এমন সব জল উদ্ভিদ ও শ্যাওলা নিধন করা দরকার।
এরাম আছে চলাফেরা ও জীবনধারণের নানা ক্ষতি করতে পারে তাই পুকুরে অনেক মাছ জন্মে বা কোনভাবে অনিচ্ছা সত্বেও প্রবেশ করে যারা মাছ চাষে ক্ষতি করে থাকে। এরা অন্যদের খাবারে ভাগ বসায় চলাফেরা তে অসুবিধা ঘটাতে পারে। অনেক রাগ হচ্ছে মাছ আছে যারা চাষের মাছকে বিভিন্ন বয়সে খেয়ে ফেলে। এদের নিধন করা দরকার। পুকুরে মহুয়া খোল প্রয়োগ করলে এরা বিষক্রিয়ার ফলে সমস্ত আগাছা ছোট বড় কিট সব মারা যাবে। বিঘা প্রতি সাধারণত সাধারণত ২০০ থেকে ২৫০ কেজি মহুয়া খোল প্রয়োগ করা যেতে পারে।
এই খোলের পরিমাণ নির্ভর করে পুকুরের কতটা জল আছে তার ওপর। আসল হিসাব ২৫০ পিপিএম হারে মহুয়া খোল প্রয়োগ করা প্রয়োজন। অর্থাৎ প্রতি লিটার জলে ২৫০ মিলিগ্রাম খৈল। এই কোয়েল সাপোনির নামক একপ্রকার রাসায়নিক আছে। যা আগাছা বা জলজ কিটের মৃত্যুর ঘটায়। এই রাসায়নিকের কার্যক্ষমতা 10 থেকে 12 দিন অবধি থাকে এবং দুই সপ্তাহ পর ওই জলসে মাছের বসবাসের উপযুক্ত হয়ে থাকে।
অনলাইনের মাধ্যমে মাছের পোনা সংগ্রহ।
কাতলা মাছের পোনা অনলাইনে কোথায় পাওয়া যায় হ্যাচারির পাশাপাশি এখন অনলাইনে অর্ডার করে আপনি কিনতে পারবেন যেকোনো মাছের পোনা মাছের পোনা কিনতে আপনার আশেপাশে থাকা হ্যাচারিগুলোতে খোঁজ নিতে পারেন।
সম্মানিত পাঠক ভাই ও বোনেরা আজকে আমার এই পোস্টটি শুধুমাত্র ২ এবং কাতল মাছ নিয়ে আলোচনা করা হলো পরবর্তীতে আরো যেসব মাছগুলো আমাদের বাংলাদেশ এবং ভারত চাষ করা হয় সেসব মাছগুলো নিয়ে আলোচনা করব অবশ্যই আমার এই পোস্টটিকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে মাছ চাষে উদ্বৃত্ত হতে পেরেছেন কিনা অবশ্যই আমাকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন শ্রীপুর কাছে আজকের মত এখানেই সমাপ্তি টানছি।
আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url