কলা পাতায় তালের পিঠা | তালের পিঠা তৈরির রেসিপি।
আসসালামু আলাইকুম, সবাইকে সদর আমন্ত্রণ জানিয়ে শুরু করছি গ্রাম বাংলার কলাপতাই তৈরি তাদের পোড়া পিঠা কিভাবে বানাবেন সেই সম্পর্কে কিছু কথা লিখে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। সম্মানিত মা ও বোনেরা আপনারা খোলাপতাই মজাদার তালের পোড়া পিঠা রেসিপি কিভাবে বানাবেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।
আপনারা যারা আমার এই পোস্টটি পড়ে তালের পোড়া পিঠা বানাবো ভাবছেন তারা অবশ্যই আমার এই লেখাটুকু শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অবশ্যই পড়লে বুঝতে পারবেন কিভাবে আপনারা গ্রামবাংলায় যেসব তালের পোড়া পিঠা বানানো হয়।
আরো পড়ুন, ফরজ গোসলের নিয়ম কানুন | ফরজ গোসলের কারণ।
আমি আজকে এই পোস্টটিতে লিখে বোঝানোর চেষ্টা করব, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী কলাপাতায় তৈরি নরম তুলতুল তালের পোড়া পিঠা। তালের পোড়া পিঠা, মানে মা খালার রেসিপিটা আজকে আমি আপনাদেরকে কিভাবে বানাতে হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন কথা না বাড়িয়ে আমরা কিভাবে কলাপতাই তালের পোড়া পিঠা বানাতে হয় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
প্রথমেই আমরা আটা দিয়ে ঘন করে বাটার তৈরি করে নেব, এজন্য প্রথমে আমাকে যা লাগবে একটি পাত্র যেখানে আটাগুলোকে বাটার তৈরি করার কাজে লাগবে। এরপরে পরিমাণ মতো চালের গুড়া অর্থাৎ চালের আটা লাগবে। পরিমাণ মতো ময়দা, হাফ কাপ পরিমাণ মত চিনি, হাফ কাপ পরিমাণ নারিকেল, পরিমাণ মতো লবণ, হাফ চা চামচ গ্রাইস। উপরের সবগুলো উপকরণ এর সাথে নেওয়া হয়ে গেলে ভালোভাবে মিশিয়ে নেব।
আরো পড়ুন, চাইনিজ চিকেন ফ্রাই রেসিপি | চিকেন ফ্রাই রেসিপি উপকরণ।
সবগুলো উপকরণ ভালোভাবে মেশানো হয়ে গেলে পিঠা বাননোর জন্য এক কাপ পরিমাণ তালের রস নিব। শুকনো উপকরণের সাথে তালের রসগুলোকে ভালোভাবে মিশিয়ে নেব যাতে করে সবগুলো উপকরের সাথে তালের রস ভালোভাবে মিশে যায়।
আমাদের মনে রাখতে হবে উপরের উপকরণগুলো দিয়ে বাটার তৈরি করার সময় কোন প্রকারের পানি বা লিকুইড ব্যবহার করা যাবে না। সম্পূর্ণ তালের রস দিয়েই কিন্তু বাটার তৈরি করতে হবে তা না হলে পোড়া পিঠ হয় প্রকৃত স্বাদ আসবেনা। এরপরে সবশেষে আমি যোগ করে নেব ৩-৪ চামচ গুঁড়ো দুধ।
আরো পড়ুন, হালিম মিক্স দিয়ে হালিম রান্নার রেসিপি | হালিম তৈরির উপকরণ।
এতে করে পিঠার স্বাদটা বেড়ে যাবে কয়েক গুণ। এরপরে বুড়ো দুধ দেওয়া হয়ে গেলে ভালোভাবে উপরে উঠতো উপকরণের সাথে মিশিয়ে নিতে হবে। সবকিছু উপকরণ যদি ঠিকঠাক থাকে তাহলে ঢাকনা দিয়ে এক ঘন্টার জন্য ঢেকে রেখে দিতে হবে।
এরপরে আমি পিঠা বানানোর জন্য কয়েকটি কলাপাতা নিয়ে নেব। অবশ্যই পাতাগুলো সাইজ 8 থেকে 10 ইঞ্চি লম্বা এবং ভেড়ামনে ৫ থেকে ৬ ইঞ্চি হতে হবে। কলাপাতা গুলোকে বাটার দেওয়ার আগে হালকা হবে চুলায় আগুনের তাপে শিখে নিতে হবে যাতে করে বাটা দেওয়ার সময় ভেঙে না যায়। তাহলে দেখবেন আপনার পছন্দের মত পিঠা বানানো খুব সহজ হয়ে যাবে।
এ পর্যায়ে তৈরি কৃত বাটার কিছু সময় নিয়ে রাখার জন্য বাটার গুলো খুব সুন্দর ভাবে আঠালো আকার ধারণ করবে যাতে কিনা পিঠা বানানো খুব টাই সহজ হয়ে যায়। এ পর্যায়ে পিঠা বানানোর পালা। এখন যে কাজটি করতে হবে প্রথমে একটি কলাপাতা টুকরো নিয়ে নিতে হবে, এরপর বাটার গুলো সুন্দরভাবে কলাপাতার উপরে রেখে দিতে হবে। এখানে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে ফোল্ডিং করার সময় যাতে বেশি টাইট না হয়ে যায় ।
আরো পড়ুন, ডিমের কোরমা রেসিপি | সেদ্ধ ডিমের রেসিপি | ডিমের পুডিং বানানোর রেসিপি ।
অর্থাৎ ময়দা গুলো বাটারের সাথে যাতে পাতাগুলো খুব জোরালো ভাবে না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। তা না হলে সিদ্ধ করার সময় আটাগুলো পাতা থেকে বের হয়ে যাবে যাতে কিনা দেখেও খুব কুরুচিপূর্ণ হয়ে যাবে এবং খেতেও তেমন একটা স্বাদ আসবে না। আমি আরেকটু বলে নেই পাতার ভিতরে বাটার দেওয়ার সময় ফাঁকা রাখার কারণটা হচ্ছে যে পাতাগুলো যখন সেদ্ধ করার জন্য পাত্রী রাখা হবে আগুনের তাপে সেগুলো সেদ্ধ হয়ে অনেকটাই ফুলে যাবে সেক্ষেত্রে পাতাতে ফেটে বাটার গুলো বের হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এখন পিঠাগুলোকে ভাব দেওয়ার পালা। এ পর্যায়ে একটি তাওয়া নিয়ে নিতে হবে বা কড়াই নিয়ে নিতে হবে। এটিকে ভালোভাবে আগে থেকেই গরম করে নিতে হবে যাতে কিনা পাতাগুলো দেওয়ার সাথে সাথেই সেগুলো সিদ্ধ বা ভাব দেওয়ার উপযুক্ত হয়ে যায়। এখন তাওয়ার উপরে পরিমাণমতো বাটারকৃত কলাপাতার টুকরোগুলো সাজিয়ে নিতে হবে।
কলাপাতা টুকরো গুলো অর্থাৎ পিঠাগুলো কড়াইয়ে সাজিয়ে দেওয়া হয়ে গেলে লো মিডিয়াম জাল দিয়ে পাঁচ থেকে ছয় মিনিট ঢেকে রাখতে হবে। পাঁচ থেকে ছয় মিনিট রাখার পরে পিঠাগুলোকে আবার উল্টিয়ে রাখতে হবে যাতে করে দুই সাইডে বাটার গুলো ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে যায়।
এখানে খেয়াল করবেন যে যেদিন কড়াইয়ের দিকে রাখা হয়েছিল সেই দিকটা পাতাগুলো একটি ধূসর কালারের হয়ে গেছে। বাটার গুলোকে উল্টানো হয়ে গেলে আবারো পাঁচ থেকে ছয় মিনিট রেখে চুলার মিডিয়ামে দিয়ে ভালোভাবে শুদ্ধ করে নিতে হবে।
মাঝে মাঝে চেক করে নিতে হবে যাতে পিছার বদ্ধ ভাবে কাঁচা না থাকে। আপনি এগুলোকে চেক করার জন্য চিকন কাঠি এর সাহায্য নিতে পারেন। এই পর্যায়ে আপনি পিঠাগুলো সেদ্ধ করা শেষ হয়ে গেলে পরিবেশনের জন্য উঠে নিতে পারেন সম্মানিত মা ও বোনেরা আমি গ্রামবাংলায় কিভাবে কলাপাতা দিয়ে দালের পোড়া পিঠা বানাবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
আরো পড়ুন, দাঁত ব্যথা কমানো প্রাকৃতিক উপায় - দাঁতের মাড়িতে ব্যথা হলে করণীয়।
অবশ্যই আপনারা জেনে গেছেন যে তালের পোড়া পিঠা বানাতে গেলে কি কি উপকরণ লাগে সেই উপকরণগুলো কোথা থেকে সংগ্রহ করবে সেগুলো হয়তো জানতে পেরেছেন। পরিশেষে আর বেশি কিছু না লিখে আমি আপনাদের মাঝে একটি কথাই বলব আপনারা যদি আমার এই পোস্টটি পড়ে তাহলে পিঠা বানানোর রেসিপিটা করতে পারেন তাহলে অবশ্যই আমাকে কমেন্টে জানাবেন এবং আমার এই পেজটিকে ফলোতেই আমার সঙ্গে থাকার জন্য আপনাদেরকে অশেষ অশেষ ধন্যবাদ।
আমার এই পোষ্টের মধ্যেই লিংক দিয়েছি যারা ডিমের রেসিপি কিভাবে তৈরি করবে এবং হালিম কিভাবে বানাবেন এ বিষয় নিয়ে লিখেছি আপনার লিংক এর মধ্যে প্রবেশ করে সেগুলো দেখে নিতে পারবেন। আবারো আমি আপনাদের মাঝে অন্য একটি রেসিপি নিয়ে হাজির হব সে যেন অবশ্যই অবশ্যই আপনারা আমার পেজটিকে ফলো দিয়ে রাখবেন যাতে অন্য একটি রেসিপি নিয়ে আলোচনা করা হলে আপনারা যাতে পেয়ে যান সে প্রত্যাশাই ভালো থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url