ফেসবুক আইডি হ্যাক থেকে বাঁচার উপায় | ফেসবুক আইডি হ্যাক হলে করণীয় কি?
আমরা যারা ফেসবুক ইউজার আছি বা ফেসবুক পেজ এডমিন ইউজার আছে কিংবা যাদের ফেসবুক পেজ নেই, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আছে তাদের ক্ষেত্রে কিন্তু ফেসবুক পেজ হ্যাকারদের কবল থেকে বাঁচিয়ে রাখাটা এ সময়ে এসে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই জন্য আপনাকে আপনার ফেসবুক একাউন্টে এসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্টেপ বা সেটিংসগুলো ঠিক করে নিতে হবে।
পোষ্ট সুচিপত্রঃ
- ফেসবুক হ্যাক হওয়ার কারণ।
- জিমেইল দিয়ে ফেসবুক আইডি খোলার নিয়ম।
- ফেসবুকের পাসওয়ার্ড ।
- শক্তিশালী পাসওয়ার্ড উদাহরণ ।
- ফেসবুক আইডি সমস্যার সমাধান ।
ফেসবুক স্টেপগুলো যদি আপনি সেটাপ না করেন, তাহলে ফেসবুক পেজ এবং অ্যাকাউন্ট দুটোই কিন্তু হ্যাকারদের কাছে হ্যাক করাটা খুব সহজ হয়ে যায়। আর সেজন্য আজকের এই কনটেন্ট বা পোস্টটিতে ফেসবুক পেজ বা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাকারদের হাত থেকে বাঁচার জন্য আপনাকে যে স্টেপগুলো সেটাপ করে নিতে হবে সে সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করব।
সুতরাং প্রতিটা পদক্ষেপ বা স্টেপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। যদি আপনি আপনার ফেসবুক পেজ বা একাউন্টে হ্যাকারদের হাত থেকে রক্ষা করতে চাইছেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য হতে পারে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলুন আমি আর কথা না বাড়িয়ে ফেসবুক পেজ বা অ্যাকাউন্ট হ্যাকারদের হাত থেকে কিভাবে রক্ষা করতে হয়, সেই স্টেপগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু করি।
ফেসবুক হ্যাক হওয়ার কারণ।
সম্মানিত পাঠক, আপনি যখন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট তৈরি করছেন বা খুলছেন বা যারা খুলেই ফেলেছেন তারাও এই সেটিংস করে নেবেন আর যারা নতুন খুলবেন তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই অবশ্যই আমি বলব একসাথে কখনোই মাল্টিপল একাউন্ট তৈরি করবেন না। যেমন
জিমেইল দিয়ে ফেসবুক আইডি খোলার নিয়ম।
তার মানে হচ্ছে, আপনাদের যাদের ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট আছে তারা একজন ব্যক্তি দুইটা অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করবেন না। সেটা একটি অ্যাকাউন্ট অরিজিনাল হতে পারে। আর একটি অ্যাকাউন্ট ফেক হতে পারে। অনেক মানুষের ক্ষেত্রেই এখন এটা দেখা যায়। একটি অরিজিনাল এবং একটি ফেক থাকে। এই কাজটি করা এখন থেকে বন্ধ করে দিন।
আরো পড়ুন, ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় - ফেসবুক রিলস থেকে ইনকাম।
যদি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট দুইটা থাকে তাহলে অরজিনাল যেটা সেটা রেখে ফেক গুলোকে রিমুভ করে দিন। কারণ এই বিষয়টি আপনার ফেসবুক একাউন্টে হ্যাক হওয়া থেকে রক্ষা করবে।
ফেসবুকের পাসওয়ার্ড ।
এখানে বলা হচ্ছে যে, আপনি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টকে বিশেষ করে ইমেইল আইডি দিয়ে ওপেন করবেন বা খুলবেন। শুধুমাত্র ফোন নাম্বার দিয়ে নয়। সুতরাং অনেক ক্ষেত্রেই শুধু ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ফোন নাম্বার দিয়ে বা ইমেইল এড্রেস দিয়ে না খোলার ক্ষেত্রে শুধু ফোন নাম্বার দিয়ে ফেসবুক একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি সহজেই হ্যাক করা হয়ে থাকে।
কিন্তু আপনি যদি ইমেইল এড্রেস দিয়ে ফেসবুক একাউন্ট খুলে থাকেন তাহলে সে ক্ষেত্রে তাদেরকে আপনার ইমেইলের অ্যাক্সেস নিতে হয়। তারপরে তারা facebook একাউন্ট হ্যাক করতে পারে তাই আপনারা চেষ্টা করবেন ইমেইল দিয়ে ফেসবুক একাউন্ট খোলার।
শক্তিশালী পাসওয়ার্ড উদাহরণ ।
এটা সত্যি এটা চমৎকার বিষয়, যখন আপনি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ওপেন করবেন তখন একটি পাসওয়ার্ড দেওয়ার প্রয়োজন হয়। আর এই পাশওয়াডটি অবশ্যই আপনি স্ট্রং পাসওয়ার্ড দেওয়ার চেষ্টা করবেন। এবং এই পাসওয়ার্ডটি কারো সাথে শেয়ার না করার ব্যাপারে খেয়াল রাখবেন।
আরো পড়ুন, ফেসবুক মনিটাইজেশন শর্ত ২০২৪ | রিলস মনিটাইজেশন শর্ত
কেননা আপনি যদি এই ফেসবুক পাসওয়ার্ডটি অন্য কারো সাথে শেয়ার করে থাকেন, তাহলে হ্যাকারদের খুব সহজেই ফেসবুক একাউন্টটি হ্যাক করা খুব সহজ হয়ে থাকে। সুতরাং পাসওয়ার্ড আপনার ফেসবুক একাউন্ট কে হ্যাকারদের হাত থেকে বাঁচার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এখানে আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে স্ট্রং পাসওয়ার্ড টা কি?
ফেসবুক আইডি সমস্যার সমাধান ।
আমি বলব স্ট্রং পাসওয়ার্ড টা বলতে যা বুঝায় যে, প্রথমত একটি ছোট হাতের অক্ষর থাকতে হবে। হতে পারে ইংরেজি যেকোনো কিছু a, এবং একটি ক্যাপিটাল অর্থাৎ বড় অক্ষর A ইত্যাদি হতে পারে । এবং আপনার পাসওয়ার্ডের মধ্যে কিছু নম্বর ব্যবহার করবেন। যেমন ১,২,৩,৫ ইত্যাদি। এরপরে যা আপনার করণীয় আপনার পাসওয়ার্ডের ভিতরে একটি সিম্বল যেমন @ # & যেটি আপনার পছন্দ হবে সেটি ব্যবহার করতে পারেন। যাতে করে এই পাসওয়ার্ডটি একবার কেউ দেখে মনে না রাখতে পারে।
কনফার্ম করুন যে এটি আপনারই অ্যাকাউন্ট ।
এখানে বলা হচ্ছে যে, আপনি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট তৈরি করার সময় যে ফোন নম্বরটি দিয়ে একাউন্টটি তৈরি করেছেন, সেটি কখনোই পাবলিক অর্থাৎ পাবলিক অপশনটিতে ফোন নম্বর দিয়ে রাখবেন না। অনেকেই আমরা আমাদের ফেসবুকে ফোন নাম্বারটা দিয়ে রাখি।
আরো পড়ুন, টিন সার্টিফিকেট অনলাইন আবেদন | E TIN registration
আমাদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য আবার সেই ফোন নম্বরটি দিয়ে আমরা ফেসবুক অ্যাকাউন্টও তৈরি করে ফেলি। সুতরাং এ ফোন নম্বরটি কিন্তু আপনার পাবলিক হয়ে যাচ্ছে। তাই আপনার ফেসবুক একাউন্টে খুব সহজে হ্যাকারদের কাছে হ্যাক করার জন্য চলে যাচ্ছে।
প্লে স্টোর ডাউনলোড অ্যাপ ইনস্টল ।
আপনারা যখন ফেসবুক ব্যবহার করবেন, তখন কোন পোস্টে যদি কোন লিংক পেয়ে থাকেন সেখানে কখনো হঠাৎ করে ক্লিক করে ফেলবেন না। বুঝেশুনে কিংবা অথরাইজ আছে কিনা বা বিশ্বাসযোগ্য কিনা একটু যাচাই বাছাই করে তারপরে ক্লিক করবেন। এর আগে, আপনার মনের অজান্তেই আপনি কখনোই ক্লিক করবেন না। আপনার এই লিংকে ক্লিক করার মাধ্যমেও অ্যাকাউন্টটি হ্যাক হয়ে যেতে পারে।
ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সীমাবদ্ধ সমস্যার সমাধান ।
আপনার পক্ষে যদি সম্ভব হয় যে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি সিকিউর করে রাখা, তাহলে এখন ফিজিক্যাল কে বাজারে কিনতে পাওয়া যায় সিটিকে ব্যবহার করতে পারেন।
আপনার অ্যাকাউন্ট লক করা হয়েছে ।
যদি আপনি এমন কোন ব্যক্তি না হয়ে থাকেন, যাদের পাবলিকলি সব কিছু প্রচার করতে হয় বা শেয়ার করতে হয়। সেক্ষেত্রে আমি আপনাকে বলব প্রাইভেসি সেটিংস অ্যান্ড টুলস এই অপশনগুলোর সবকিছু পাবলিক করে রাখবেন না।
আরো পড়ুন, ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় - ফেসবুক রিলস থেকে ইনকাম।
কিছু কিছু সেটিং স প্রাইভেট করে রাখবেন। যেমন ফ্রেন্ড লিস্ট, অথবা আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট টা কে লক করে রাখতে পারেন। যাতে করে সহজে কেউ আপনার একাউন্টে সবকিছু দেখতে না পারে বা তথ্যগুলো না নিতে পারে।
ব্যবহারকারীকে তার গোপনীয়তা সেটিংসের কারণে কল করা যাবে না।
এখানে আপনি আপনার যতগুলো দিক থেকেই আপনার অ্যাকাউন্টটিকে সেভ করে রাখবেন ততটাই ভালো। যেমন রয়েছে টুল সেকশন। হ্যাঁ আপনি এই টুল সেকশন অথরিটি যে অপশন গুলো আছে সেটিকে আপনি সেভ করে রাখবেন।
আপনার ফেসবুক একাউন্টে যদি কেউ লগইন করে তাহলে আপনার মোবাইল ফোনে এসএমএস এর মাধ্যমে কোড চলে আসে। এই কোড দিয়েই লগইন করতে হয় অতএব এই কোডটি আপনি কাউকে বলবেন না । এবং আন অথরাইজড অপশনটিতে এনাবুল করে রাখবেন।
আরো পড়ুন, বিকাশ লোন কিভাবে পাওয়া যাবে - বিকাশ লোন কারা পাবে।
যাতে করে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে যদি কেউ লগইন করে তাহলে আপনাকে এসএমএস নোটিফিকেশন এর মাধ্যমে জানানো হবে এবং আপনি বুঝতে পারেন যে আপনার একাউন্টে কেউ লগইন করছে। তাই আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি হ্যাকারদের হাত থেকে রক্ষা করা অনেকটাই সুলভ হয়ে থাকে।
ফেসবুকে ট্যাগ করে কিভাবে।
আপনার কোন বন্ধু যখন আপনাকে ট্যাগ করে কোন পোস্ট করে, দেখবেন তখন সরাসরি আপনার টাইমলাইন্সে পোস্ট হয়ে যায়। এরকম কোন অপশন যদি অন করা থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি সেটাকে অফ করে দেবেন।
বন্ধুত্বের সহমর্মিতা চর্চা।
আপনার ফ্রেন্ডলিস্টকে কখনোই পাবলিক করে রাখবেন না। এটা কে হাইড করে রাখবেন। যাতে করে আপনি ছাড়া অন্য কেউ দেখতে না পায়।
এই অপশনটি কিন্তু হ্যাকারদের হাত থেকে আপনার ফেসবুক পেজটিকে বা একাউন্টটি কে রক্ষা করার অন্যতম উপায়।
আপনি খেয়াল রাখবেন আপনার কাছে যে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গুলো আসছে সেই ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট গুলো ভালোভাবে চেক করে নেবেন। যদি আপনি মনে করেন যে কোন ফেসবুক আইডি ফেক মনে হয় সেই ফ্রেন্ডলিস্টের বা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট কে আপনি মার্ক এজ স্প্যাম করে দিবেন।
কেননা এই ফ্রেন্ড রিকোয়েস্টটি যেমন আপনার জন্য ক্ষতিকর তেমনি ফেসবুক কমিনিটির জন্য ক্ষতিকর।
ফেসবুক কোড নাম্বার।
আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের যদি ফেস রিকগনাইজেশন ওয়ান করা থাকে, তাহলে সেটাকে আপনি অফ করে দেবেন। কারণ এর কারণে হয়তো আপনার অ্যাকাউন্টটি অন্য কারোর হাতে বা অন্য কারো নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে পারে।
সেটিংস সংজ্ঞায়িত করুন।
আপনারা এখানে খেয়াল করে দেখবেন যে, নিজের অজান্তেই অনেকগুলো অ্যাপস আমাদের ফেসবুক একাউন্টের সঙ্গে অথরাইজ বাই এক্সেস দিয়ে রাখেন এবং তারা আমাদের ফেসবুক আইডির এক্সেস নিয়ে রাখছে। সেটি আপনি আপনার apps এর মাধ্যমে বা সেটিংস এর মাধ্যমে গেলেই দেখতে পাবেন।
সুতরাং আপনার কাছে মনে হয় যে যেই অ্যাপসগুলো আপনার প্রয়োজন নেই বা অবাঞ্ছিত সেগুলোকে আনইন্সটল করে দেবেন। এবং যেগুলো প্রয়োজন সেগুলো রাখবেন।
আরো পড়ুন, ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করার নিয়ম - how to upload reels in facebook.
সম্মানিত পাঠক, আমি যে এই কয়েকটি টিপস আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম বা আলোচনা করলাম অবশ্যই আপনারা সেটি পড়ে বুঝতে পেরেছেন যে, আপনাদের ফেসবুক একাউন্ট হ্যাকারদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কি কি পদক্ষেপ নিতে হতে পারে।
এজন্য আমি বলব যখন আপনারা একাউন্ট তৈরি করবেন তখন অবশ্যই ভেবে চিন্তে বা আমারে টিপসগুলো পড়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারেন। ধন্যবাদ সবাইকে আমার এই পোস্টটি ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য এবং যদি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে আমাকে জানিয়ে রাখবেন বা জানাবেন তাহলে আমি এরকম টেকনিক্যাল পোস্ট গুলো লিখতে উৎসাহ পাবো । আমার পেজটিকে অবশ্যই ফলো দিয়ে রাখবেন। আল্লাহ হাফেজ।
আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url