অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের নিয়ম | আয়কর রিটার্ন জমা দিতে কি কি লাগে।
আসসালামু আলাইকুম, ইংরেজি পহেলা জুলাই থেকে পরবর্তী বছরের ৩০শে জুন পর্যন্ত সময়কাল একটি কর বর্ষ। নির্দিষ্ট সময়ে করদাতা যাবতীয় আয়, ব্যয়,সঞ্চয় এবং সম্পদ অর্জনের হিসাব উপস্থাপনকেয় আয় ব্যয় হিসাব বিবরণী বা ইনকাম ট্যাক্স ।
আপনি জানেন কি ? নতুন অর্থবছরে আমাদের যে বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে এর মধ্যে ৩৮ ধরনের সেবা নিতে হলে আপনাকে অবশ্যই ইনকাম ট্যাক্স রিটার্নের কপি জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক প্রস্তাব করা হয়েছে এবং সেই ৩৮ ধরনের বিষয়গুলো যদি আমি এই পোষ্টের মাধ্যমে তুলে ধরি তাহলে অনেক লম্বা বিস্তারিত বর্ণনা হয়ে যাবে।
তাই আপনারা যদি আমাকে কমেন্টের মাধ্যমে জানান তাহলে অবশ্যই পরবর্তী পোস্টের মাধ্যমে যে ৩৮ ধরনের বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে ইনকাম ট্যাক্স এর জন্য সেগুলো লিখে প্রকাশ করব।
আরো পড়ুন, রিসেলিং কি? রিসেলার করে আয় - বাংলাদেশের রিসেলিং সাইট।
আপনাদের একটি কথা বলে রাখি, এখন শুধু ১২ ডিজিটের টিআইএন জমা দিলেই হবে না সেই সাথে আপনার আয় ব্যয় বিবরণী ও স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির হিসাবের ইনকাম ট্যাক্স রিটার্নের কপি আপনাকে কিন্তু বাধ্যতামূলক জমা দিতেই হবে। এবার চলুন ২০২২/২৩ অর্থ বছরের কিছু হিসাব জেনে নেওয়া যাক।
২০২২/২৩ অর্থবছরের বাজেট অনুযায়ী টিআইএন জমা দেওয়ার পাশাপাশি আপনাকে যে সব সুবিধা পেতে অবশ্যই অবশ্যই আপনার ইনকাম ট্যাক্স রিটার্নের প্রাপ্তি স্বীকার পত্র, একনলেজমেন্ট স্লিপ, অথবা আয়কর প্রত্যয়ন পত্র জমা দিতে হবে সে বিষয়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
আরো পড়ুন, বিকাশ লোন কিভাবে পাওয়া যাবে - বিকাশ লোন কারা পাবে।
সঞ্চয়পত্র ক্রয়,ব্যাংক থেকে লোন অথবা ব্যাংকে টাকা রাখলে এমন কি আপনি যদি ক্রেডিট কার্ড নিতে চান তাহলে আপনাকে এতদিন যেসব সেবা নিতে শুধুমাত্র টিন সার্টিফিকেট জমা দিলেই হত। কিন্তু এখন থেকে এসব সেবা পেতে অবশ্যই আপনার ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন সার্টিফিকেট অথবা ইনকাম ট্যাক্স রিটার্নের প্রাপ্তি স্বীকার পত্র আছে সেগুলো জমা দিতে হবে।
আপনি জানলে অবাক হবেন, বাংলাদেশ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের টিন ধারি সংখ্যা ৭৫ লাখেরও বেশি। কিন্তু প্রতিবছর আয়কর রিটার্ন জমা দেই মাত্র ২৫ লাখ এর ও কম। এই ২৫ লাখ EITN ধারী সংখ্যা ছাড়া বাকি কেউ ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিচ্ছে না।
যদিও ২০১৯ সাল থেকে প্রত্যেকটি EITN ধারি ব্যক্তিকে ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সরকার এই উদ্যোগটি নিয়েছে, ট্যাক্স রিটার্ন কারীর সংখ্যা বাড়ানোর জন্য ফলে গুরুত্বপূর্ণ বেশিরভাগ সেবা নিতে হলে আপনাকে অবশ্যই ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে হবে।
এতকিছু বলার পর আপনারা নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন, লেখাটি বা পোস্টটি কত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। সুতরাং অবশ্যই ইনকাম ট্যাক্স সংক্রান্ত সম্পূর্ণ বিস্তারিত জানতে হলে আপনাকে এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।
আপনি যদি আমার এই পোস্টটি প্রথম পড়ে থাকেন তাহলে পোস্টটিতে ফলো দিয়ে এবং অন্য পোস্ট পড়ার জন্য অনুরোধ থাকলো আর আমি বিভিন্ন পোস্টে মানুষের প্রয়োজনীয় তথ্যগুলোই তুলে ধরার চেষ্টা করি। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আমরা ইনকাম ট্যাক্স নিয়ে যে বিষয়গুলো পরিলক্ষিত হয় এবং আলোচনা করছিলাম সেটি আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করি।
আরো পড়ুন, ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন কপি | ভোটার আইডি কার্ড চেক।
সম্মানিত পাঠক, আপনার ব্যক্তিগত কিংবা কোম্পানির ট্যাক্স রিটার্ন জমা করতে কি কি ডকুমেন্ট লাগবে। এবং সেই সাথে পোষ্টের শেষে পরিচয় করিয়ে দেবো একটি বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানের সাথে। যাদের কাছ থেকে আপনি আপনার ব্যক্তিগত অথবা কোম্পানির ট্যাক্স রিটার্ন সাবমিশন করে নিতে পারবেন। এবং এ সংক্রান্ত যাবতীয় সেবা পেতে পারেন সহজে। তাহলে চলুন ট্যাক্স রিটার্ন জমা করতে কি কি ডকুমেন্ট লাগবে।
আয়কর রিটার্ন জমা দিতে কি কি লাগে।
আপনার কোম্পানি অথবা ব্যক্তিগত ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য যেসব ডকুমেন্ট লাগবে সে সব ডকুমেন্ট গুলো সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হল।
- ব্যক্তিগত তথ্য: ব্যক্তিগত তথ্যের ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমেই EITN সার্টিফিকেট এর ফটোকপি জমা দিতে হবে।
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি: আপনাকে জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি অবশ্যই জমা দিতে হবে।
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি: টিন সার্টিফিকেট জমার সাথে সাথে আপনাকে আপনার পাসপোর্ট সাইজের ছবি জমাও দিতে হবে।
- চাকুরীর তথ্য: আপনি যে জায়গায় চাকরি করেন বা কি চাকরি করেন সেই সম্পর্কিত একটি ডকুমেন্ট সাথে জমা দিতে হবে। অর্থাৎ আপনি যদি চাকুরীজীবী হয়ে থাকেন তাহলে সাথে বেতন বিবরণী অফিস কর্তৃক জমা দিতে হবে।
- ব্যাংক বিবরণী: আপনি যে ব্যাংক বিবরণী টা দিবেন সেটাও কিন্তু একই নিয়মে হবে। বিগত বছরের অথবা চলতি বছরের অনুযায়ী জমা দিতে হবে।
- উৎস কর্তন সার্টিফিকেট: আপনার আয় ব্যায় থেকে যে উৎস কর পেয়ে থাকেন সেখান থেকেই জমা দিতে হবে।
- প্রভিডেন্ট ফান্ড সার্টিফিকেট: আপনার যদি প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে থাকে সেক্ষেত্রে প্রভিডেন্ট ফান্ড সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।
- গৃহ সম্পত্তি থেকে আয়: আপনি যে গৃহ সম্পত্তি থেকে আয় করে থাকেন সেখান থেকে আয়-ব্য ায়ের বিবরণী জমা দিতে হবে। যেমন বাড়ি ভাড়া প্রাপ্ত রশিদ, আপনি যে বাড়ি ভাড়া দিয়েছেন সে বাড়ি ভাড়া থেকে কত টাকা আয় করছেন সেই সম্পর্কিত তথ্য জমা দিতে হবে। অথাৎ বাড়ি ভাড়ার চুক্তি পত্র, আপনি যে বাড়ি ভাড়াটি দিচ্ছেন তার একটি চুক্তিপত্র সাবমিট করতে হবে। এবং আপনি যদি বাড়ি ভাড়া ব্যাংকের মাধ্যমে নিয়ে থাকেন তাহলে ব্যাংক বিবরণী প্রয়োজন পড়বে।
- হোল্ডিং ট্যাক্স ও ভূমিকর খাজনা আদায়ের বিবরণ: আপনাকে অবশ্যই হোল্ডিং ট্যাক্স বা খাজনা আদায়ের বিবরণী যে তথ্য আছে সেগুলো সাবমিট করতে হতে পারেন।
- ব্যবসায়িক তথ্য: আপনি যদি ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন তাহলে, ব্যবসায়ীর ক্ষেত্রে যেসব লেনদেনগুলো হয়ে থাকে অর্থাৎ ব্যবসায়ী লাভ লোকসানের তথ্যগুলো তুলে ধরতে হবে। যেমন ট্রেড লাইসেন্স, বার্ষিক ক্রয় বিক্রয় ও আয় বিবরণী।
- সম্পদ ও দায় বিবরণী: আপনার যে সম্পদ আছে সেই সম্পদের দায় বিবরণী জমা দিতে হবে।
- বিনিয়োগের তথ্য: আপনার যদি বিনিয়োগ মধ্য থেকে কোন কিছু থেকে থাকে তাহলে বিনিয়োগ সংক্রান্ত ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। যেমন যদি আপনার ডিপিএস থাকে সেক্ষেত্রে ডিপিএসের তথ্য জমা দিতে হবে। আবার আরেকটু খোলাসা করে বলা যায়, কোন লাইফ ইন্সুর, সঞ্চয় পত্র, এবং শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ সেক্ষেত্রে সেগুলো ডকুমেন্ট সাবমিট করতে হবে।
- সম্পদ ও দায় বিবরণী: সম্পদ এবং দায় বিবরণীতে আপনার যদি কোন কিছু থেকে থাকে সেক্ষেত্রে আপনার সেগুলোর প্রয়োজন পড়বে। যেমন হাউজ, এপার্টমেন্ট যদি নিজের নামে থাকে। এরপরে গাড়ি, জমি, ফার্নিচার, ইলেকট্রনি ক্স ইত্যাদি যদি নিজের নামে থাকে।
- ব্যাংক ঋণের তথ্য: ব্যাংক ঋণের তথ্য যদি নিজের নামে হয় এবং অন্যের ঋণের তথ্য যদি নিজের নামে হয় এবং যারা রেগুলার রিটার্ন জমা দেন তাদের ক্ষেত্রে বিগত বছরের আয়কর রিটানের যে তোমার কপি আছে সেগুলো কিন্তু তথ্য হিসাবে জমা দিতে হবে।
এখানে কিছু কথা বলে রাখি, আমি ধরে নিচ্ছি আপনি এই বছরের জন্য ইনকাম ট্যাক্স জমা দিবেন। আপনার অফিস কর্তুক যে বেতন বিবরণী দিবেন সেটা অবশ্যই ০১/০৭/২০২১ থেকে ৩০/০৬/২০২২ পর্যন্ত যে বিবরণীটা আছে সেই বিবরণীটা জমা দিবেন।
সুতরাং আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে, রিটার্ন ট্যাক্স জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে, সকল ক্ষেত্র থেকে কয়েক ধরনের তথ্য প্রোভাইড করা লাগতে পারে। বাকি কি প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট পড়তে পারে।
আরো পড়ুন, পেওনিয়ার একাউন্ট কি | পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম বাংলাদেশ
লেখাটির শেষ পর্যায়ে এসে আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে cordova associates BD এর সাথে। cordova associates BD দীর্ঘদিন যাবত বিশ্বস্ততার সাথে নির্মূল ভাবে ব্যক্তিগত ও কোম্পানির ট্যাক্স রিটার্ন সাবমিট করে যাচ্ছে।
তাই আপনিও নিশ্চিন্তে cordova associates BD এর মাধ্যমে আপনার ব্যক্তিগত এবং কোম্পানির ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে পারেন। cordova associates BD এর সাথে যোগাযোগ করার জন্য আমাদের কাছে তথ্য আছে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।
আরো পড়ুন, জমি ক্রয়ের পূর্বে ও পরে করণীয় | জমি কেনার আগে কি দেখতে হয়।
সম্মানিত পাঠক বৃন্দ, ইনকাম ট্যাক্স সম্পর্কে অবগত হয়েছেন যে কিভাবে ব্যক্তিগত এবং কোম্পানির ট্যাক্স রিটার্ন সার্টিফিকেট জমা দিবেন সেই সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আমি ১২ টি ধাপের কথা বলে ছিলাম কিন্তু আলোচনার মাধ্যমে তা ১৪ টি ধাপ আলোচনা করে ফেলেছি। আমার এই পোস্টটি পড়ে যদি আপনারা উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই লাইক কমেন্ট এবং ফলো দিয়ে সঙ্গে থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।
আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url